Creatinine সম্পর্কে জানুন (Dr. Khaleda Jahan Jenny)

 






ক্রিয়েটিনিন এক ধরনের বর্জ্য। মাংসপেশির কোষ ভেঙে তৈরি হয়। যখন ক্রিয়েটিনিন উৎপন্ন হয় তখন রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। পরে রক্ত যখন কিডনির ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন কিডনি এ রক্ত ছেকে ক্রিয়েটিনিন  প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। তাই রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা নির্ণয় করলে বোঝা যায় কিডনি কতখানি কর্মক্ষম আছে। ক্রিয়েটিনিন মাত্রা নির্দিষ্ট লেভেল এর উপরে হলেই বোঝা যায় তার কিডনি সমস্যা হয়েছে। রক্তে ক্রিয়েটিনিন মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার বেশ কিছু উপায় আছে যেমন-

১. বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যারা ক্রিয়েটিনিন যুক্ত খাবার বেশি খান অন্যদের তুলনায় তাদের ক্রিয়েটিনিন বাড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যদি আপনার খাদ্য তালিকায় বেশি পরিমাণ দুগ্ধজাত খাবার গরু মহিষের মাংস বেশি থাকে তাহলে আপনার ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

ক্রিয়েটিনিন একটি রাসায়নিক যৌগ যা আপনার পেশীতে শক্তি উৎপাদনকারী প্রক্রিয়া থেকে অবশিষ্ট থাকে। সুস্থ কিডনি রক্ত ​​থেকে ক্রিয়েটিনিন ফিল্টার করে। ক্রিয়েটিনিন প্রস্রাবের বর্জ্য পণ্য হিসাবে আপনার শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

ক্রিয়েটিনিন হলো একটি নাইট্রোজেনাস বজ্র পদার্থ যা মাংসপেশির ক্রিয়েটিন ফসফেট ভেঙে গঠিত হয়। তাই রক্ত থেকে গুমেরুলাস দ্বারা ফিল্টার করার পর প্রস্রাব হিসেবে নির্গত হয়। অ্যামাইনো এসিড থেকে লিভার, অগ্নাশয় ,কিডনিতে সংশ্লেষিত হয়।

ক্রিয়েটিনিনের সাধারণ মাত্রা পুরুষের (0.7- 1.4) mg/ dl

ক্রিয়েটিনিনের বৃদ্ধি পেলে রোগ লক্ষণ:

যে সকল লক্ষণ রোগের মধ্যে প্রকাশ পায় সেগুলো হচ্ছে

বমি বমি ভাব

বুক ব্যথা 

ক্লান্তি এবং দুর্বল লাগে

ঘুমের অভাব

প্রস্রাবের চাপ বেশি কিন্তু পরিমাণ কম অনিয়ন্ত্রিত চাপ ইত্যাদি

ক্রিটিনিন লেভেল বেড়ে গেলে সেক্ষেত্রে পাঁচ থেকে সাত গ্লাসের বেশি পানি পান করা যাবে না। প্রোটিন ৪০ গ্রাম গ্রহণ করা যেতে পারে তাতে সমস্যা নেই। আশ জাতীয় কিছু দেয়া যাবে না অর্থাৎ শাক, লাল চাল ,লাল আটা এড়িয়ে চলতে হবে। কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।

 পানি শূন্যতা, মূত্রনালীর বাধা কিডনি ও পেশির সমস্যা গর্ভাবস্থায় প্রি একলামশিয়া কারণে ,উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি কারণে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বা লেবেল বেড়ে যেতে পারে।

ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা কমানোর উপায়-

 ১. খাদ্যে প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি হওয়ার পরিবর্তে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় শাক সবজি রাখুন এটি আপনার ক্রিয়েটিন মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে।

 ২. ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার যোগ করে পান করুন যেকোনো বেলায় খাবার পরে এটি খেতে পারেন।

 ৩. দারুচিনি টুকরো বা গুঁড়ো করে খেতে পারেন কারণ এটা প্রাকৃতিক ভাবে প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ায় দারুচিনি ক্রিয়েটিননিন লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৪. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেলেই ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে

৫. শরীরে ক্রিয়েটিনিন এর মাংসপেশি অবিরাম কাজ করলে এ লেভেল বেড়ে যায় আর তাই সুস্থ থাকতে স্বাভাবিক শারীরিক পরিশ্রম অবশ্যই জরুরি তবে খুব বেশি কঠোর পরিশ্রম নয়।

আর যেটা সবচেয়ে জরুরী সেটা হল যাদের ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের অবশ্যই একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।

সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এবং অন্যকে ভাল রাখুন।


ডা: খালেদা জাহান জেনী।

ডক্টরস হোমিও ক্লিনিক।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ