High blood pressure (Dr. Khaleda Jahan Jenny)
head
উচ্চ রক্তচাপ কি?
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় উচ্চ রক্তচাপের ই আরেক নাম হাইপারটেনশন। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা এনএইচএস হাইপারটেনশনকেই হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ বলে বর্ণনা করেছেন। বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৫০। কোটি মানুষ ভুগছেন
উচ্চ রক্তচাপ কেন হয়?
প্রায় ৯০% রোগীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপে কোন নির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি। তবে কিছু কিছু বিষয় আছে যা উচ্চ রক্তচাপে আশঙ্কা বাড়ায় সেগুলো হচ্ছে-
## অতিরিক্ত ওজন এবং অলস জীবনযাত্রা:
অধিক ওজন সম্পন্ন লোকদের উচ্চ রক্তচ াপ প্রায়ই হয়ে থাকে সেই সাথে যদি কেউ শারীরিক পরিশ্রম না করে, অলস ভাবে জীবন যাপন করে।
## বংশানুক্রমিক:
উচ্চ রক্তচাপের বংশগত ধারাবাহিকতা আছে । যদি বংশের উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকে তবে পরবর্তী বংশধরদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে।
## ধুমপান
ধূমপান করেন তাদের শরীরে তামাকের নানা রকম বিষাক্ত পদার্থের প্রতিক্রিয়ায় উচ্চ রক্তচাপ সহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে।
##অতিরিক্ত মদ্যপান
যারা মাত্রাধিক মদ পান করেন তাদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়া সম্ভব না বেশি।
## অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
অতিরিক্ত ডুবো তেলে ভাজাপোড়া খাবার , অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার , ফাস্টফুড ইত্যাদি খাবার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তনালী দেয়াল মোটা ও শক্ত হয়ে যায় যার ফলশ্রুতিতে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।
## অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ
খাবার লবণে সোডিয়াম থাকে ।যা রক্তে জলীয় অংশ বাড়িয়ে দেয় ফলে রক্তের আয়তন বেড়ে যায় এবং রক্তচাপও বেড়ে যায়।
সেজন্য অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
## ডায়াবেটিস
কারো ডায়াবেটিস থাকলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি থাকে।
##মেন্টাল স্ট্রেস
অতিরিক্ত রাগ উত্তেজনা ভীতি এবং মানসিক চাপের কারণেও রক্তচাপ সাময়িকভাবে বেড়ে যেতে পারে ।
##কিছু জটিল রোগ
কিছু কিছু রোগের কারণে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে এই কারণগুলোর মধ্যে হলো- কিডনির রোগ, অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি এবং পিটুইটারি গ্রন্থি টিউমার। ধমনীতে বংশগত রোগ। গর্ভধারণ অবস্থায় একলাম্শিয়া ও প্রিএকলাম্পশিয় হলে। অনেকদিন যাবৎ জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি ব্যবহার। স্টেরয়েড জাতীয় হরমোন গ্রহণ এবং ব্যথার কিছু কিছু ঔষধ খেলে।
উচ্চ রক্তচাপ কত?
সাধারণত একজন সুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে আদর্শ ব্লাড প্রেসার হলো ১২০/৮০ মিঃ মিঃ মার্কারি দুই ধরনের রক্তচাপ মানবদেহে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার এবং নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসার।
High blood pressure:
ব্লাড প্রেসার পরিমাপের সময় কোন ব্যক্তি রক্তের উপর চাপ 140/90 mmHg বা তার বেশি হওয়া মানে ওই ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে বয়স ৮০ বছর বা তার বেশি হলে 150/90 mmHg কে উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়।
Low blood pressure:
ধমনীতে রক্তচাপ 90/60 mmHg বা তার কম হলে বুঝতে হবে যে নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে।
উচ্চ রক্তচাপ কমানোর সহজ উপায়
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহজ উপায় গুলো হলো
লবণ কম খাওয়া।
অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা ।
নিয়মিত ব্যায়াম
চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করা
আঁশযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া
মদ্যপান এবং ধূমপান পরিহার করা
মানসিক স্ট্রেস থেকে নিজেকে সংযত রাখা
নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করা
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ -
উচ্চ রক্তচাপের ফলে নাক থেকে রক্ত পড়তে পারে।
বারবার মাথা যন্ত্রণা হওয়া উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ হতে পারে বিশেষ করে মাথার পিছন দিকে ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আবশ্যক।
ক্লান্ত লাগা উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম উপসর্গ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রোজকার সাধারণ কাজে ক্ষেত্রেও ক্লান্তি আসতে পারে।
পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপের কারণে দম ফুরিয়ে আসার মত অনুভূতি তৈরি হতে পারে।
রোগীর দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসতে পারে।
চোখের সামনে কালচে রঙের বিন্দু দেখতে পায়। আচমকা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে দৃষ্টিশক্তি লোপ পাওয়াও উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ হতে পারে।
বুকে ব্যথা হতে পারে ।উচ্চ রক্তচাপ হার্টের সমস্যা বাড়ায় সে কারণে রোগীর বুকে ব্যথা হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধের উপায়-
অবশ্যই সতর্ক হওয়া ছাড়া উচ্চ রক্তচাপের রোগীর কোন বিকল্প পথ নেই। যে সব পদক্ষেপের মাধ্যমে সুস্থ থাকা যাবে সেগুলো হচ্ছে
খাবারে আলগা লবণ বাদ দিতে হবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
শাকসবজি ফলমূল বেশি করে খেতে হবে।
নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করতে হবে ।
নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করতে হবে।
রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে
তামাক এবং তামাক জাতীয় বস্তু ত্যাগ করতে হবে।
পরিমিত ঘুমাতে হবে
স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমাতে হবে
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে না।
কিছু কিছু রোগীর প্রেসার মাঝে মাঝে খুব হাই এবং মাঝে মাঝে খুব লো হয়ে যেতে পারে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই রোগীর প্রেসার মেপে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে প্রেসার নিয়ন্ত্রণের ওষুধ দিতে হবে।
হাই প্রেশার এবং লো প্রেসার যাদের আপডাউন হয় তাদের প্রেশার নিয়ন্ত্রণের জন্য হোমিওপ্যাথিতে চমৎকার কিছু মেডিসিন রয়েছে লক্ষণ সাদৃশ্য প্রয়োগ করলে রোগী তৎক্ষণাৎ আরাম বোধ করেন।
রোগীর যখন প্রেসার অত্যাধিক মাত্রায় বেড়ে যায় তখন কিছু কিছু হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন আছে, যা লক্ষণ সাদৃশ্যে প্রয়োগ করলে তৎক্ষণাৎ রোগীর প্রেসার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে যেমন -
বেলেডোনা, গ্লোনইন, রাউলফিয়া, প্যাসিফ্লোরা, নেট্রাম মিউর, মেডোরিনাম, সালফার , ইগ্নেসিয়া ইত্যাদি।
Dr. Khaleda Jahan Jenny
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন