p>  Renal stone 

আজকে আমি আমার একটা রোগীর কেইস টেকিং আপনাদের সাথে শেয়ার করব ঘটনাটা ২০২১ সালের। ঐদিন আমি বগুড়ার চেম্বারে রোগী দেখছিলাম।

ঢাকা থেকে ( আমার পুরাতন পেশেন্ট) আমাকে ফোন দিয়ে জানালেন ম্যাডাম আমার ভাইয়ের (২৪) অবস্থা খুব খারাপ। আমার ভাইয়ের জন্য কি কিছু করতে পারবেন? জানতে চাইলাম কি হয়েছে?

 রোগীর বোন বললেন , ম্যাডাম আমার ভাইয়ের অবস্থা খুবই আশঙ্কা জনক। সে প্রচন্ড ব্যথায় কান্না করছে চিৎকার করছে। প্রস্রাবের প্রচন্ড জ্বালাপোড়া, তলপেটে জ্বালাপোড়া , ব্যথা, কোমরে প্রচন্ড ব্যথা, জ্বর, প্রচুর বমি, কিছুই খেতে পারছে না। শুধু বলছে আমি বাঁচবো না। আরো আনুষঙ্গিককিছু লক্ষণ ছিল। ডক্টর অনেকগুলো টেস্ট করিয়েছেন। ড. ইমারজেন্সি অপারেশন করতে বলেছেন ।আমি বললাম রিপোর্টগুলো আমাকে ছবি তুলে পাঠিয়ে দেন। রিপোর্টে দেখলাম রোগীর প্রস্রাব ইনফেকশনের মাত্রা অনেক বেশি, কিডনিতে পাথর আছে ছোট একটা। প্রস্রাবে এলবুমিন আছে, ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা সামান্য বেড়েছে। এনিমিয়া দেখা দিয়েছে। ESR এর মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবকিছু শুনে আমি রোগীটাকে ইমারজেন্সি কিছু মেডিসিন প্রেসক্রাইব করলাম। কিছুদিন মেডিসিন গুলো খাওয়ার পরে আলহামদুলিল্লাহ তো যথেষ্ট ইম্প্রুভ হল । মোটামুটি ব্যথা যন্ত্রণা তার কমে গেল। এক সপ্তাহ পরে আমি তাকে কুরিয়ার করে মেডিসিন পাঠালাম। এবং আগাম সতর্ক করে দিলাম ব্যথা বাড়লে ভয় না পেতে কারণ কিডনি স্টোনটা যখন বের হবে তখন ব্যথা হতে পারে। রোগীর আত্মীয়রা বললেন সমস্যা নেই কিডনি পাথর বের হতে যদি ব্যথা হয় হোক তবুও যেন কিডনি পাথরটা পড়ে যায়। আমি তাদেরকে আশ্বস্ত করে বললাম ইনশাল্লাহ কিডনির পাথর বের হয়ে আসবে। আপনারা ধৈর্য ধরে ওষুধগুলো খাওয়ান। ওষুধ চলাকালীন তিন দিনের মাথায় রোগীর প্রচন্ড ব্যথা বেড়ে গেল। যেহেতু আমি বগুড়ায় এবং তারা ঢাকায় ছিলেন আমি বললাম ইমারজেন্সি ভাবে হসপিটালে নিয়ে যান সেখানে ক্যাথেটারের ব্যবস্থা করেন এবং রোগীকে স্যালাইন দেন। ভয় পাবার কিছু নেই পাথর বের হয়ে যাবার আগে অনেক সময় এরকম পেইন হয়ে পাথর বের হয়। ধৈর্য ধরেন ইনশাল্লাহ পাথর বের হয়ে আসবে।

রোগীর পরিবার আমার প্রতি এতটাই আস্থাশীল ছিলেন। আমি যা বললাম তারা আমার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন। রোগী অবশ্য কিছুটা অধৈর্য হয়ে গিয়েছিল প্রচন্ড ব্যাথার কারণে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার পরে ক্যাথেটার পাওয়ানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাথরটা বের হয়ে আসে। এরপর রোগী কিছুটা সুস্থ হলে বাড়ি ফিরে আসে। এরপর তার ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার জন্য বেশ কিছুদিন চিকিৎসা করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ এখন রোগী পুরোপুরি সুস্থ।।

আলহামদুলিল্লাহ যখন একটা পেশেন্ট পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে যায় তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতে ইচ্ছা হয় আমি মনে হয় সত্যি সত্যি মানব সেবায় নিজেকে বিলীন করে দিতে পেরেছি। মহাত্মা হ্যানিম্যানের আদর্শ মতবাদের শিক্ষা আমার বৃথা হয়নি।

Dr. Khaleda Jahan Jenny

Bangladesh homoeopathic medical college and hospital Dhaka.

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ